সুজিত গৌড় ( হুগলী ) : দেখতে দেখতে দেশের স্বাধীনতার বয়স হল ৭৫ বছর। কিন্তু আজও শ্রীরামপুরের স্বাধীনতা সংগ্রামী ক্ষিতীশ চন্দ্র রায়কে কোন স্বীকৃতি দিল না কেন্দ্র সরকার অভিযোগ পরিবারের। স্বাধীনতার দাবিতে উত্তাল দেশ। একদিকে রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে মৃত্যুর পরোয়ানা সাঁটা বন্দুক। সালটা ১৯৪৫। সশস্ত্র বিপ্লবীদের মিছিলে প্রথম সারিতে ন্যাশনাল আর্মি (আইএনএ)কমান্ডিং অফিসার জ্ঞান সিং ক্যাপ্টেন আব্দুল হোসেন সঙ্গে ক্ষিতীশ চন্দ্র রায়। চোখের পলক পড়তে না পড়তেই ব্রিটিশদের বন্দুকের নল থেকে বেড়িয়ে এল গরম বুলেট। পায়ের পেশির মাংশল ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল ক্ষিতীশ বাবুর। রক্তাক্ত ক্ষিতীশবাবুকে পুলিশের চোখ আড়াল করে নিয়ে চলে গেল বিপ্লবীরা। এই বছরটি ২৮ ফেব্রুয়ারি পরিবারের দাবি । অধুনা বাংলাদেশের কক্সবাজারে চলছিল গোপন মিটিং। পুলিশ ও মিলিটারির যৌথ অভিযানে ধরা পরেন ক্ষিতীশ চন্দ্ররায়। ঠিকানা হল চট্টগ্রাম জেলা। পরের বছর ১৯৪৬ সালের ১৩ ই মার্চ জেল থেকে পালিয়ে সোজা কোলকাতার খিদিরপুরে। শুরু হল আবার আন্দোলন । যোদ্ধাদের স্বপ্ন হল বাস্তব। অবশেষে এলো স্বাধীনতা। ক্ষিতীশ বাবুর কিন্তু লড়াই চলতেই থাকলো। অনেক কিছু দিয়েছেন দেশকে। বিনিময় কেন্দ্র সরকার এই স্বাধীনতা সংগ্রামীকে স্বীকৃতিটুকুও দেয়নি অভিযোগ পরিবারের। আর এখন স্বাধীনতা সংগ্রামী ক্ষিতিশ চন্দ্ররায়ের ঠিকানা শ্রীরামপুরের মহেশ কলোনির টালির বাড়িতে। প্রয়াতঃ ক্ষিতীশবাবু স্ত্রী এবং দুই ছেলেকে নিয়ে কোন রখম সংসার চলছে স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবারের। স্বীকৃতির দাবিতে এখনো চলছে লড়াই। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সাহায্য রয়েছে-বলেই দুবেলা কোন রখম খেয়ে বেঁচে রয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবার। এক ছেলে অটো চালায়, আর এক ছেলে শ্রীরামপুর পৌরসভার এ অস্থায়ী সাফাই কর্মী। পরিবারের অভিযোগ আজও পর্যন্ত জুটল না কেন্দ্র সরকারের সাহায্য। ক্ষিতীশবাবুর বড় ছেলে অভিজিৎ চন্দ্রবায় বলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং মহাত্মা গান্ধীর স্নেহধন্য ছিলেন বাবা। আজ অসহায় অবস্থার প্রতি কি কোনদিনই ফিরে তাকাবে না কেন্দ্র। আমাদের পরিবার চরম অর্থ সংকটে পড়ে রয়েছে। কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি কোন সুরাহা হয়নি। মেলেনি কোন সাহায্য । কাল আবার লাল কেল্লায় উঠবে জাতীয় পতাকা। অভিযোগ বঞ্চনা ও উদাসীনতার আরো এক বছর শেষ হবে। শুরু হবে নতুন বছর। পরিবারের অভিযোগ রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা এনেছিল বাবা। কিন্তু কিসের বিনিময়ে স্বীকৃতি জুটবে তাদের জানা নেই। ঘুম ভাঙবে কেন্দ্রের ?। কোন মন্ত্রী বা সাংসদ স্বাধীনতা সংগ্রামী ক্ষিতীশ বাবুর পরিবারের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে।